প্রিলিমিনারি প্রিপারেশনের শুরুতেই পরিকল্পনা করে নিন কোন বিষয়ে কতটা সময় দেবেন
প্রিলিমিনারি প্রিপারেশনের শুরুতেই পরিকল্পনা করে নিন কোন বিষয়ে কতটা সময় দেবেন
প্রিলিমে আমরা সবাই যে ভুলটি করি, তা হলো যেসব বিষয়ে নম্বর কম, সেসব বিষয়কে মাথায় তুলে রাখি, অথচ যেসব বিষয়ে সহজেই নম্বর তোলা যেতে পারে, সেসব বিষয়ে কম সময় দেই। ফলে দেখা যায়, কম নম্বরের বিষয়টিতে ভালো করলেও অপেক্ষাকৃত বেশি নম্বরের বিষয়টিতে নম্বর কমে যায়।
শুরু থেকেই প্রার্থীরা সাধারণ জ্ঞানের পেছনে ছোটেন। আয়াসসাধ্য, সহজবোধ্য, আগ্রহজাগানিয়া বলে জিকের কদর সবসময়েই ছিল। কেউ কেউ ম্যাথে দুর্বলতার জন্য প্রিপারেশনের অর্ধেকটা সময় ম্যাথে ব্যয় করে ১৫ তে ৭/৮ পান, অথচ একটু চেষ্টা করলেই যে ইংরেজি সাহিত্যে ১৫ তে ১০ আদায় করা যায়, সেটির পেছনে ছোটেন না। এজন্য শুরু থেকেই এই প্ল্যানিংটুকু করা জরুরী যে আসলেই কোন সাবজেক্ট কতটা সময় ডিজার্ভ করে!
বাংলা ও ইংরেজিতে দেবেন সর্বোচ্চ সময়।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলা ও ইংরেজি প্রতিটিতে ৩৫ করে মোট ৭০ নম্বর। এই ৭০ এ ৪৫+ তুলতে না পারলে প্রিলিম পাস করার ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে যাবেন। অনেকেই গ্রামারে দুর্বল, সেক্ষেত্রে যতটা শাণিত হওয়া যায়, ততোটা করার পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যের অংশটুকুতে সর্বোচ্চটা দিয়ে গ্রামারে পিছিয়ে থাকা কভার দেবেন। একই ভাবে বাংলা ব্যাকরণে পিছিয়ে থাকলে মানোন্নয়নে পর্যাপ্ত (অতিরিক্ত নয়!) সময় দিয়ে বাকিটুকু দেবেন বাংলা সাহিত্যে।
বাংলাদেশ অংশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ত্রিশ নম্বর। তাই বাংলাদেশের নয়টি ভাগ যত্ন নিয়ে পড়বেন। বাংলাদেশ অংশে একটু শ্রম দিলে ১৮-২৩ এমনকি এর চেয়ে বেশিও পাওয়া যায়। বাংলাদেশ অংশ সিলেবাস ধরে ততোটুকুই পড়বেন যা বিসিএসে আসে, এবং অতীতে যে অংশ থেকে বিসিএসে প্রশ্ন এসেছে। দেখা গেলো মধ্যযুগের ইতিহাস ৫-৭ দিন ধরে আপনি তুলোধুনো করে পড়লেন, অথচ এ অংশ থেকে ৪১ তম বিসিএস ব্যাতীত প্রতিবার প্রশ্ন এসেছে ১ বা ২টি। ১-২ নম্বরের জন্য এত ডিটেইল ডেপথে এতোটা সময় দিয়ে পড়ার কি প্রয়োজন আছে? নেই। এজন্য প্রশ্ন এনালাইসিস করে পড়া জরুরী।
আন্তর্জাতিক নাকি গণিত?
আপনি গণিতে কাচা হলে গণিতে কিছুটা সময় দিয়ে বাকিটুকু আন্তর্জাতিকে দিন। অল্প ইনভেস্টে ভালো নম্বর আসবে। আবার গণিতে ভালো হলে আন্তর্জাতিক অংশের প্রেশার কম নিয়ে আইসিটি বিজ্ঞানে ভালো করার চেষ্টা করুন। নিজ এবিলিটি অনুযায়ী ১৬০-৭০ এর ভালো প্রিপারেশন নিন। আমরা কেউই অলরাউন্ডার নই, সবারই কমবেশি দুর্বলতা রয়েছে। কেউই ২০০ নম্বরে এক্সপার্ট হতে পারবো না, হতে চাওয়াও উচিত নয়।
বিজ্ঞান, আইসিটি, ভূগোল, সুশাসন, মানসিক দক্ষতা
৫টি সাবজেক্ট হলেও এগুলোর মোট নম্বর এমনকী বাংলা ও ইংরেজির মোট নম্বরের সমানও নয়। তাই বাংলা ইংরেজিতে যা সময় দেবেন, ততোটুকু সময় এই ৫টি সাবজেক্ট সবগুলো মিলে ডিজার্ভ করে।এগুলোর মাঝে বিজ্ঞানের সিলেবাস সব থেকে বড়, তাই বেছে বেছে শুধুমাত্র বিসিএসে আসা টপিকগুলোতে বেশি গুরুত্ব দিন। মানসিক দক্ষতা প্রাকটিস করলে অনায়াসে ১২+ পাওয়া সম্ভব। এই পাঁচ সাবজেক্টের মোট ৬৫ নম্বরে ৩৫-৪০ পেলে অবশ্যই ভালো প্রিপারেশন আছে ধরে নেবেন।
যারা বিসিএসের লম্বা জার্নি শুরু করছেন তাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
মোঃ মারুফুল আনাম
পরিবেশ ইন্সপেক্টর (সুপারিশপ্রাপ্ত)
৪১তম বিসিএস
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (সুপারিশপ্রাপ্ত)
৪৩তম বিসিএস