ফেনী জেলা যাবতীয় তথ্য

ফেনী চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি উপকূলীয় জেলা ।

প্রতিষ্ঠা কাল:

1984 সালের  ৬ ডিসেম্বর ফেনী বৃহত্তর নোয়াখালী থেকে পৃথক হয়।
১৯৮৪ সালের পূর্বে এটি নোয়াখালী জেলার একটি মহকুমা ছিল, এ মহকুমার গোড়াপত্তন হয় ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মীরসরাই, ছাগলনাইয়া ও আমীরগাঁও এর সমন্বয়ে। প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন কবি নবীনচন্দ্র সেন।

অবস্থান:

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে ২২°৪৪´ থেকে ২৩°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°১৫´ থেকে ৯১°৩৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে ফেনী জেলার অবস্থান।

রাজধানী ঢাকা থেকে এ জেলার দূরত্ব প্রায় ১৫১ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার।

আয়তন:

ফেনী জেলার মোট আয়তন ৯২৮.৩৪ বর্গ কিলোমিটার, মতান্তরে ৯৯০.৩৬ বর্গ কি.মি.।
(আয়তন অনুযায়ী বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা হল রাঙ্গামাটি এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম জেলা হল নারায়ণগঞ্জ।)

জেলা / উপজেলা/ থানা:

বাংলাদেশের প্রথম জেলা- চট্টগ্রাম জেলা ১৬৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সর্বশেষ জেলা- ফেনী জেলা ৭ নভেম্বর ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
64টি জেলার মধ্যে 42 তম এ feni.
ফেনী জেলায় ৬টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৫টি পৌরসভা, ৪৩টি ইউনিয়ন, ৫৬৪টি গ্রাম ও ৫৪০টি মৌজা রয়েছে এবং ৩ টি সংসদীয় আসন রয়েছে।

ফেনী বাংলাদেশের কত তম জেলা?

ফেনী বাংলাদেশের ৬৪তম জেলা। এর থানা/উপজেলা সংখ্যা ৬টি। সেগুলো হলো:
  • ফেনীসদর
  • ছাগলনাইয়া
  • সোনাগাজী,
  • দাগনভূঞা,
  • ফুলগাজী,
  • পরশুরাম,
জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে সোনাগাজী উপজেলা সর্ববৃহৎ (২৮৪.৮৯ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা পরশুরাম (৯৫.৭৬ বর্গ কিমি)।

ফেনীর পূর্ব, নাম ছিল শমসের নগর। ফেনী নদীর নামানুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী। এটি একটি উপকূলীয় জেলা. ফেনী শব্দটি ফেনা থেকে ফেনীর উৎপত্তি।কারণ আগে ঐ অঞ্চল ছিল নিম্নভূমিতে প্লাবিত, ফলে প্রচুর কচুরীফেনা থাকত।তাই এই ফেনা থেকে উৎপত্তি এই ফেনী শব্দটি।

মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় একটি বিশেষ নদীর স্রোতধারা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়।

শিক্ষা:

কত সালে ফেনীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু হয়?


প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র এক বছর পর ১৯২২ সালে ফেনী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একই বছরের ৮আগস্ট বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফারসি, সংস্কৃত, গণিত, ইতিহাস ও যুক্তিবিদ্যা বিষয়ে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আই. এ ক্লাস চালু হয়। যার মধ্যে ৭১জন ছিল মুসলিম।

সংস্কৃতি:

ফেনী জেলার বিখ্যাত খাবার কি?

খন্ডলের মিষ্টি বাংলাদেশের ফেনী জেলার খন্ডল নামক স্থানে উৎপন্ন একটি মিষ্টি যা ফেনী অঞ্চলে বিখ্যাত এবং খুবই জনপ্রিয়। এটি মূলত রসগোল্লার একটি ভিন্ন সংস্করণ। এ মিষ্টিটির বিশেষত্ব হল বাংলাদেশের অন্যান্য সব মিষ্টি ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় খাওয়া হলেও খন্ডলের মিষ্টি ঠান্ডা খাওয়ার পাশাপাশি গরম গরমও খাওয়া হয়।

দর্শনীয় স্থান:

নদ-নদী

ফেনী জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো হল ফেনী নদীমুহুরী নদীছোট ফেনী নদীকহুয়া নদীসিলোনিয়া নদী এবং কালিদাস পাহালিয়া নদী[১০]

মুক্তিযোদ্ধ:

ফেনী মুক্ত দিবস কবে?

পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে জনপদে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার প্রথম সূর্য। আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২১, ফেনী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের হটিয়ে ফেনীকে হানাদারমুক্ত করে স্বাধীন করা হয়। ওইদিন সকাল থেকে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা ২নং সাব সেক্টর কমান্ডার ও ১০ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা অধিনায়ক লে. কর্নেল জাফর ইমাম, বীর বিক্রম’র (তৎকালীন ক্যাপ্টেন) নেতৃত্বে দলে-দলে লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে ফেনী শহরে প্রবেশ করে। শহরের রাজাঝির দিঘির পাড়ে এসডিও অফিস ও কোর্ট-কাঁচারি সংলগ্ন স্থান থেকে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে জাফর ইমাম ও জননেতা খাজা আহমদ সাহেব হলুদ রঙ’র মানচিত্র খঁচিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিযোদ্ধারা সকালেই ফুলগাজীর বন্দুয়া থেকে এসে ফেনী সার্কিট হাউজে (বর্তমান ফেনী সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউজ) প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ১৫ বেলুচ রেজিমেন্ট ও ২৪ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স এর সেনারা উর্ধ্বশ্বাসে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়, ৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রণভঙ্গ দিয়ে শেষ রাতের দিকে শুভপুর ও বারইয়ারহাট হয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব: ***

আবদুস সালাম (ভাষা শহীদ):

আবদুস সালাম
জন্ম
আবদুস সালাম

২৭ নভেম্বর ১৯২৫

মৃত্যু ২১শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রায় দেড় মাস আহত থাকার পর ৭ এপ্রিল ১৯৫২ মৃত্যু বরণ করেন।

পেশা চাকরি
পরিচিতির কারণ ভাষা শহীদ

আবদুস সালাম (২৭ নভেম্বর ১৯২৫ – ৭ এপ্রিল ১৯৫২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ভাষা আন্দোলনকর্মী যিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতির দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১৯৫২ সালে নিহত হন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে শহিদ হিসেবে ভূষিত করা হয়।[১]

প্রারম্ভিক জীবন 

সালাম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার নামানুসারে পরবর্তীতে গ্রামের নামকরণ করা হয় সালামনগর। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ফাজেল মিয়া ও মাতার নাম দৌলতের নেছা। ফাজেল মিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ইরাকের বসরায় কর্মরত ছিলেন। সালাম কৃষ্ণরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর তৎকালীন মাতুভূঁই কলিমুল্লাহ মাইনর স্কুলে (বর্তমানে মাতুভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়) অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর আতাতুর্ক মডেল হাই স্কুলে (তৎকালীন দাগনভূঞা আতাতুর্ক হাইস্কুল) ভর্তি হন এবং সেখানে দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। আর্থিক অনটনে পরবর্তীতে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।

কর্মজীবন 

সালাম লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পর কলকাতা গমন করেন এবং সেখানে মেটিয়াবুরুজে তার বড় বোনের স্বামী আবদুল কাদেরের মাধ্যমে কলকাতা বন্দরে কাজ শুরু করেন। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৭ সালে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন এবং আজিমপুরে (পলাশী ব্যারাক) ৩৬বি নং কোয়ার্টারে বসবাস শুরু করেন। এ সময় তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ডিরেক্টরেট অব ইন্ডাস্ট্রিজ বিভাগের ‘পিয়ন’ হিসেবে কাজ শুরু করেন।

ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ 

১৯৫২ সালের ভাষা শহীদ আবুল বরকত, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবদুস সালাম, আবদুল জব্বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেন্দ্রে।

বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বায়ান্নোর ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ এলোপাথাড়িভাবে গুলি চালালে অন্যদের সাথে আবদুস সালামও গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেড় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৯৫২ সালের ৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[২] তাকে ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

সম্মাননা

ফেনী জেলার ফেনী-১ আসনের এমপি আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিম।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *